আজকের জীবনযাপনের (Lifestyle) কোনও ঠিক ঠিকানা নেই। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সকলে ব্যস্ত। আর ব্যস্ততা কোনও শারীরিক পরিশ্রমে নয়, সবটাই মানসিক। সারাদিন কম্পিউটারের সামনে বসে সকলে। হাত চলছে, আর মাথা। শরীরের কোনও পরিশ্রম নেই। এর উপর আবার খাবারদাবার ঠিক নেই। সব তেল, ঝাল যুক্ত খাবার। এমন জীবনযাপনের প্রভাব সরাসরি পড়ছে শরীরের উপর। ওজন বাড়ছে রীতিমতো। আর এই ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে ঝুলে পড়ছে নানা অসুখ। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা বুঝতেও পারি না কখন অগোচরে সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এ দেশের বহু মানুষের মধ্যে দেখা দিচ্ছে ওজন বৃদ্ধির সমস্যা। ২০২০ সালের এক তথ্য অনুযায়ী, মুম্বই শহরের প্রায় ৫৭ শতাংশ মানুষের ওজন বেশি। দেশের এই মেট্রো শহরের হাল দেখলেই অন্য শহরগুলির সম্পর্কে ধারণা করে নেওয়া যায় অনায়াসে। চিকিৎসকদের কথায়, ওজন বেশি থাকা নিজেই একটি রোগ। এক্ষেত্রে শরীরে বিপাকীয় সমস্যা দেখা দেয়।
ওজন বেশি থাকার সমস্যা
ওজন বেশি থাকলে টাইপ ২ ডায়াবিটিস, করোনারি হার্ট ডিজিজ, উচ্চ রক্তচাপ, হাই কোলেস্টেরল, অস্টিওআর্থ্রাইটিস সহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা যায়। তবে বর্তমানে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওজন বেশি থাকার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শ্বাস নেওয়ার সমস্যা
শ্বাসের সমস্যা এবং ওবেসিটি
শ্বাসের সমস্যা যাঁর আছে তিনিই জানেন! এই সমস্যা শীতের সময় বাড়ে। এক্ষেত্রে নতুন সমীক্ষা জানাচ্ছে, ৮০ শতাংশ ওজন বেশি থাকা মানুষ ভোগেন শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায়।
বিজ্ঞান বলছে, ওজন বেশি থাকলে ফুসফুসের ক্ষমতা অনেকটাই কমে। এক্ষেত্রে শরীরে কম পরিমাণে অক্সিজেন প্রবেশ করে। কমে যায় ডায়াফ্রামের শক্তি। ফলে শ্বাস নিতে হয় সমস্যা।
এছাড়া ওজন বেশি থাকা মানুষের শ্বাস নেওয়ার পদ্ধতিতেও ঘটতে পারে পরিবর্তন। এছাড়া শরীরে মেদ জমলে বেরতে থাকে খারাপ হর্মোন। সেক্ষেত্রে শ্বাস নিতে হতে পারে সমস্যা।
কী করবেন?
আপনার অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টের কোনও সমস্যা হলে আজই ওজন কমান। কতটা ওজন কমাতে হবে তা ঠিক হবে বিএমআই মেপে। এক্ষেত্রে ইন্টারনেটে বিএমআই (ইগও) ক্যালকুলেটর খুলুন। সেখানে ওজন ও উচ্চতা লিখুন। সেখান থেকেই মিলবে বিএমআই।
এক্ষেত্রে শরীর ভালো রাখতে চাইলে ওজন কমাতে হবে। ওজন কমাতে হলে প্রথমে শুরু করুন শারীরিক পরিশ্রম। জিমে যেতে পারেন। আবার হাঁটতেও পারেন, করতে পারেন জগিং। এছাড়া পরিবর্তন আনতে হবে খাদ্যাভ্যাসে। এমন খাবার খাবেন না যা ওজন বাড়ায় না। শাক, সবজি, ফল খাওয়া বাড়ান। বেশি তেল, ঝাল, মশলা এড়িয়ে চলুন। বাইরের খাবার খাবেন না। এই কয়েকটি পরিবর্তনই আপনার সমস্যা অনেকটাই কমাতে পারে।