২০২০ সালের ১৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা বিভাগ।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস রোগের মহামারি বলতে বাংলাদেশে এটির প্রাদুর্ভাব ও দ্রুত বিস্তারের চলমান ঘটনাটিকে নির্দেশ করে, যা বর্তমানে চলমান বিশ্বজুড়ে মহামারির একটি অংশ।
করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯ (কোভিড-১৯) নামক একটি রোগ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার কারণে এই বৈশ্বিক মহামারিটির সৃষ্টি হয়েছে।
গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রীয় রোগলক্ষণসমষ্টি সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাস ২ (সার্স-কোভ-২) নামক সংক্রামক ধরনের একটি জীবাণুই প্রকৃতপক্ষে, মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়ে মানবদেহে এই রোগটি সৃষ্টি করে।
চীন থেকে প্রথম উৎপত্তি হওয়ার পর; বাংলাদেশে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির কথা প্রথম জানা যায় ৮ই মার্চ, ২০২০ সালে এবং প্রথম মৃত্যুটি ঘটে ১৮ মার্চ, ২০২০ সালে। (আইইডিসিআর এর ওয়েবসাইট)
এরপরের দুই মাস দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ৩ অংকের মধ্যে ছিল যা বাড়তে বাড়তে জুলাই মাসে সর্বোচ্চতে পৌঁছেছিল। ২ জুলাই তারিখে সর্বোচ্চ ৪০১৯ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট)
ধারণা করা হয়েছিল শীতকালে এ ভাইরাসের প্রকোপ আরো বাড়বে। কিন্তু বাস্তবে এর বিপরীত অবস্থাই দেখা গিয়েছিল। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে সংক্রমণের গ্রাফ কিছুটা ওপরের দিকে উঠলেও ডিসেম্বর মাস থেকে সেটা দ্রুত নিচের দিকে নামতে থাকে। ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে সংক্রমণের হার ৩ শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল আর দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৩০০ জনেরও কম। (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট)
বাংলাদেশ সরকার প্রথম দিকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল ১৭ মার্চ ২০২০ হতে, যা পরবর্তিতে ১ বছরেরও বেশি সময় বন্ধ ছিল। ২২ মার্চ ২০২০ হতে, ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল যা পরবর্তীকালে সাত দফা বাড়িয়ে ৩০ই মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল যা ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে খুলে দেওয়া হয়। (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট) কিন্তু করোনাভাইরাস এর নতুন রূপ ওমিক্রন এর বিস্তার এর কারণে ২০২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ২১ ফেব্রুয়ারিত পর্যন্ত ২ দফায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর ছুটি বাড়ানো হয়
দেশজুড়ে ‘লকডাউন’ কার্যকর করার আগ পর্যন্ত আক্রান্ত বাড়ি, প্রয়োজনে জেলা, উপজেলা ইত্যাদি লকডাউন করা হয়েছিল। ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের ২৯টি জেলা সম্পূর্ণ এবং ১৯টি জেলা আংশিকভাবে লকডাউন করা হয়েছিল। সারাদেশে সন্ধ্যা ৬টার থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বাইরে বের হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। একইসঙ্গে এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় চলাচল বন্ধের জন্যও প্রশাসন কড়াকড়ি আরোপ করেছিল। (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট)
আজ সেই ২০ মার্চ। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা বিভাগ।
২০২০ সালের (বুধবার) এদিন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা বিকেলে নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন। আইইডিসিআরর বেলা সাড়ে তিনটায় এই সংবাদ ব্রিফিং হয়।
মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া ব্যক্তি পুরুষ। তার বয়স ৭০ বছর।
মারা যাওয়া ব্যক্তি বিদেশ থেকে আসা ও সংক্রমিত এক ব্যক্তির মাধ্যমে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানান আইইডিসিআর পরিচালক।
মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, ওই ব্যক্তি (মারা যাওয়া) উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। পাশাপাশি তার স্টেনটিং বা রিং পরানো ছিল।