কানাডা ইউকনে রয়েছে তাখিনি নামে একটি সুইমিং পুল। সেই পুলে ডুব দিলেই ঘটে এক অদ্ভুত ঘটনা। দাঁড়িয়ে যাবে মাথার চুল। সেই সঙ্গে পুরো মাথায় বিচিয়ে থাকবে সাদা তুলার মতো বরফ। শীতকালে এই পুলে নামলে মাত্র ৬০ সেকেন্ডে মাথার চুল বরফে ঢেকে গিয়ে দাঁড়িয়ে যাবে। কেননা সে সময় এই পুলের পানির তাপমাত্রা মাইনাস ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে।
ইউকনে তাখিনির মতো ১০০ বেশি উষ্ণ প্রস্রবণ রয়েছে। যেখানে বিভিন্ন তাপমাত্রায় পানিতে গোসল করতে পারেন পর্যটকরা। এই উষ্ণপ্রস্রবণ একসময় কানাডার প্রথম অধিবাসিরা গোসল করতেন। ১৯৪০ সালে এই পুলটিকে কাঠ এবং ক্যাম্পাস দিয়ে নতুন করে তৈরি করা হলে সারা বিশ্বেই বেড়ে যায় এর জনপ্রিয়তা। সারা বছরই গোসলের নেশায় ভিড় দেখা যায় পর্যটকদের। শীতের মৌসুমে এই উষ্ণপ্রস্রবণ গোসল করার জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতা চলে দর্শনার্থীদের মধ্যে। এই প্রতিযোগিতায় জয়ী ১৫০ ডলার পুরস্কারও দেয়া হয়।
তবে বিশ্বের সর্বোচ্চ সুইমিং পুল হচ্ছে সিঙ্গাপুরের মেরিনা বে। এই একটি পুলের পানি ধারণক্ষমতা তিন লাখ ৭৬ হাজার ৫০০ গ্যালন। সিঙ্গাপুরের মেরিনা বে-তে একটি বিলাসবহুল হোটেলের ৫৭ তলায় রয়েছে এই পুলটি। বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল আর আকর্ষণীয় স্থাপনা হলো মেরিনা বে স্যান্ডস। তিনটি বিসাল টাওয়ারের উপর জাহাজের মতো দেখতে হোটেলের ছাদে রয়েছে এই পুলটি।
৫৫ তলার উপরে জাহাহের মতো দেখতে স্কাই পার্কটি দুটি অংশে বিভক্ত। প্রথমটি হচ্ছে ডেকের অংশ। যেখান থেকে সমগ্র সিঙ্গাপুরকে দেখা যায় আর দ্বিতীয়টি অংশটি হচ্ছে একটি বিশাল সুইমিং পুল। সুইমিং পুলটিসহ এই বিলাস বহুল রিসোর্ট কম্পানিটি নির্মাণ করতে খরচ হয়েছে পাঁচ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ইউএস ডলার। আফ্রিকান ক্যাসিনো এ্যান্ড রিসোর্ট কোম্পানি লাসভেগাস কর্পোরেন্ট এর মালিক। ২০১০ সালে যখন এটি চালু হয়, তখন এটি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দামি ক্যাসিনো সম্পত্তি। জমিসহ তখন এর মূল্য ধরা হয়েছিল ৮০০ কোটি সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চতুর্থ বৃহত্তম শহর হিলস্টনের একটি আবাসনে রয়েছে কাঁচের ঝুলন্ত একটি সুইমিং পুল। ৪৪ তলা ঐ ভবনের একেবারে ছাদে রয়েছে পুলটি। সুইমিংপুলের ১০ ফুট অংশ ছাদ থেকে সম্পূর্ণ বাইরে বেরিয়ে রয়েছে। টেক্সাসের সবচেয়ে উঁচু এবং হিলস্টনের একমাত্র কাঁচের পুল এটি। আট ইঞ্চি পুরু উন্নত প্রযুক্তির কাঁচ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এটি। সেখানে ডুব দিলেই দেখা মিলবে পুরো শহরের এক অপরূপ দৃশ্য।
বিশ্বের সবচেয়ে গভীরতম সুইমিংপুল তৈরি করা হয়েছে পোল্যান্ডে। ১৪৮ ফুট গভীর এই পুলের নিচে আছে আস্ত একটি হোটেল, ডুবো টানেল এবং গুহা। এই সুইমিংপুলের নিচে যে আন্ডার ওয়াটার হোটেলটি নির্মিত হয়েছে সেখানে অতিথিরা পানির পাঁচ মিটার গভীরের ঘরে থেকে চারপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে। শুধু তাই নয়, বিশ্বে এটি প্রথম সুইমিংপুল যেটি ব্যবহৃত হবে প্রশিক্ষণের জন্য। পাশাপাশি পর্যটকরা চাইলে ভিন্নধর্মী এই সুইমিংপুলের পানিতে সাঁতার কেটে আনন্দ পাবে। এগারোশত টল ইস্পাত ব্যবহার করে নির্মাণ করা হয়েছে এটি। যেখানে খরচ হয়েছে প্রায় ১০ দশমিক ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।