হৃদরোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক; আর ফিরলেন না।
মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখা স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের আকাশ থেকে ঝরে পড়ল আরেকটি তারা। এবার চিরবিদায় নিলেন অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রোববার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। সোমবার দুপুরে আসে দুঃসংবাদ। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) কিংবদন্তি এই ফুটবলারের মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করেছে।
দীর্ঘদিন ধরে প্রাণঘাতী ক্যান্সারের সাথে ভুগে গত ৮ অগাস্ট অন্যলোকে পাড়ি জমান স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠকদের একজন সাইদুর রহম্যান প্যাটেল।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে জনমত গঠন ও তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে একঝাঁক স্বাধীনতাকামী ও সাহসী ফুটবলার ও ফুটবল কর্মকর্তা দল গঠন করে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ১৬টি ম্যাচ খেলেছিলেন। সেই ম্যাচ থেকে পাওয়া অর্থ স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল দিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের তহবিলে। জাকারিয়া পিন্টু ছিলেন দলের অধিনায়ক।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর দেশে ফিরেও জাতীয় দলের হাল ধরেন জাকারিয়া পিন্টু। তার অধীনে ১৯৭৩ সালে মালয়েশিয়া মারদেকা কাপে অংশ নেয় বাংলাদেশ। খেলোয়াড়ী জীবন শেষে ফুটবল সংগঠক হিসেবে তিনি জড়িত ছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সঙ্গে।
তিন বছর আগে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলকে সংবর্ধনা দেয় বাফুফে। সেসময় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ এবং পরবর্তী সময়ের নানা আক্ষেপ নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন জাকারিয়া পিন্টু।
সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘আমার সৌভাগ্য যে আজ আমরা সবাই একসাথে বসেছি। এমন সৌভাগ্য আমার জীবনে বহুবার এসেছে। কাজী সালাউদ্দিনকে (তখনকার বাফুফে সাবেক সভাপতি) ধন্যবাদ, এমন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য। অনেক খেলোয়াড়ের সাথে আমার মাঝেমাঝে দেখা হয়েছে; আবার দেখাও হয়নি। আমি অধিনায়ক হিসেবে আমার যে দায়িত্ব, সেটা পালন করার চেষ্টা করেছি। প্রথমবারের মত ফুটবল ফেডারেশন ব্লেজারের মাপ নিয়েছে, এটা আমার ভালো লেগেছে। অনেকেই আমাদের ভুলে গেছে।”
৮১ বছর বয়সে জাকারিয়া পিন্টু চলে গেলেন সবকিছুর ঊর্ধ্বে।